
আমলারা চায়নি, তাই গণমাধ্যম সংস্কার হয়নি: জিমি আমির
নিজ্বস প্রতিনিধি
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সদস্য জিমি আমির বলেছেন, কমিশন প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে আছে। আমলারা চায়নি বলেই এখন পর্যন্ত গণমাধ্যম সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৩৬৫ দিন’ শীর্ষক সেমিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে জিমি আমির বলেন, মার্চ মাসে কমিশন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, কিন্তু এখনও আলোর মুখ দেখেনি। এখন পর্যন্ত সরকারি পর্যায়ে গণমাধ্যম কমিশন নিয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কোনো কথা উঠেনি।
গত পাঁচ দশক ধরে কোনো রকম সার্বজনীন কাঠামো ছাড়াই চলে দেশের গণমাধ্যম। এত দীর্ঘ সময়ের অনিয়মের ফিরিস্তি এবং সমাধান দিতে হয়েছে মাত্র তিন মাসের মধ্যে। কমিশনের প্রতিবেদনে গণমাধ্যমের মৌলিক সংস্কারের যে প্রস্তাবনা রয়েছে, তা একরকম উপেক্ষিত বলে অভিযোগ করেন তিনি।
জিমি আমির বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনে সব রাজনৈতিক দল মিলে নানা বিষয়ে আলোচনা করলেও সেখানে গণমাধ্যম সংস্কারের কথা একবারও ওঠেনি। আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা বলতেই পারেন, গণমাধ্যম নিয়ে কমিশনে কোনো আলোচনা হয়নি, তাই সংস্কারও হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল, গণমাধ্যমে প্রয়োজনীয় মৌলিক পরিবর্তনের তালিকা দ্রুত তৈরি করে জমা দিতে। সরকার আশ্বস্ত করেছিল, জমা দেয়া সুপারিশ অর্ডিন্যান্স আকারে জারি করা হবে। কিন্তু পরে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় অর্ডিন্যান্স আটকে যায়। আমলারা নিজেদের হাতে ক্ষমতা রাখতে গণমাধ্যম সংস্কারে বাধা দিয়েছে।’
কমিশনের মূল লক্ষ্য ছিল সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নিরাপদ সংবাদ সংগ্রহের পরিবেশ তৈরি করা। এছাড়া করপোরেট মিডিয়া হাউজ সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে গণমাধ্যমকে কাঠামোগত প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া। কিন্তু এ কোনটাই সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
ক্ষোভ প্রকাশ করে জিমি আমির বলেন, ‘দেশে অনেক গণমাধ্যম আছে যেখানে সাংবাদিকরা মাসে ৮-১০ হাজার টাকার বেশি বেতন পান না। অনেক প্রতিষ্ঠান সাংবাদিকদের শুধু প্রেস কার্ড দিয়ে বলে, নিজের টাকা নিজেই উপার্জন করে নিতে। এ অবস্থায় একজন সাংবাদিক বেঁচে থাকার তাগিদে অন্য আয়ের উৎস খুঁজে বের করে, জড়িয়ে পড়ে দুর্নীতিতে—এটা নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পথে বাধা।’
সরকার ও রাজনৈতিক দল নানা কারণে মাঠের সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়, অথচ মিডিয়া হাউজের কর্তাব্যক্তিরা সব ক্ষমতা পুঞ্জীভূত করে। এসব কর্তাব্যক্তিরা কোনোদিন প্রশ্নের মুখোমুখি হয় না, বিপদে পড়ে মাঠের সাংবাদিকরা। মাঠের সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কমিশন সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও আমলাদের অনাগ্রহে পুরো প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে আছে বলে অভিযোগ করেন জিমি আমির।
Comment / Reply From
You May Also Like
Latest News
Vote / Poll
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন কি?