Dark Mode
Saturday, 23 August 2025
ePaper   
Logo
গাজীপুরে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে পিক আপ ধাক্কায় শ্রমিক নিহত

গাজীপুরে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে পিক আপ ধাক্কায় শ্রমিক নিহত

এস এম জহিরুল ইসলাম, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
 
গাজীপুরের শ্রীপুরে সড়কে নির্মাণ সামগ্রী বালু ফেলে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা পরিণত হয়েছে মৃত্যুর ফাঁদে। এ কারণে শুক্রবার (২২ আগস্ট) ভোরে শ্রমিকবাহী একটি লেগুনা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে। ঘটনাস্থলেই এক নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১২ জন।
 
ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা-বরমী আঞ্চলিক সড়কের টেপিরবাড়ী বাজার এলাকায়। নিহত নারী শ্রমিকের নাম নমীতা। তিনি গুরুতর আহত লেগুনা চালক জুয়েলের স্ত্রী। দম্পতি গাজীপুরের মুলাইদ (পল্লী বিদ্যুৎ মোড়) এলাকার আমিনুল ইসলামের বাড়ির ভাড়াটিয়া। বর্তমানে চালক জুয়েল ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
 
প্রতিদিনের মতো প্রায় ১০-১২ জন শ্রমিক সাতখামাইর থেকে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুরে মোশারফ কম্পোজিট টেক্সটাইল কারখানায় যাচ্ছিলেন। কিন্তু সড়কে বালুর পাহাড় ফেলে রাখা থাকায় লেগুনাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে লেগুনাটি দুমড়েমুচড়ে যায়।
 
স্থানীয় সূত্র জানায়, কাপাসিয়া থানার আমরাইদ এলাকার অলিউল্লাহ আল আমিন টেপিরবাড়ী এলাকায় সড়কের অর্ধেক অংশ জুড়ে বালু ফেলে রেখেছিলেন। বাড়ির মালিকের এমন গাফিলতিই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। অলিউল্লাহর স্ত্রী বৃষ্টি স্বীকার করেছেন বালু ফেলার কথা। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বালু সরাতে গেলে এলাকার সুরুজ ও হানিফ তাদের কাছে চাঁদা দাবি করে, ফলে বালু সরানো সম্ভব হয়নি।
 
এমন অজুহাত দায় এড়ানোর অযোগ্য। সড়কে বালু ফেলে জনগণের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলা নিছক অবহেলা নয়, বরং হত্যার সামিল বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
 
শুধু শুক্রবার ভোরেই নয়, এর আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেও একই স্থানে সিএনজি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক মো. বাবুল মিয়া বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই আমি দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা দিয়েছি। অথচ সতর্ক করার পরও সড়ক থেকে বালু সরানো হয়নি। এটি সরাসরি অপরাধ।”
 
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল কুদ্দুস জানান, সড়কে বালু ফেলার কারণে লেগুনাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়েছে। এতে ঘটনাস্থলেই এক নারী শ্রমিক নিহত এবং ১২ শ্রমিক আহত হন।
 
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, “নিহত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত লেগুনা থানায় আনা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
 
স্থানীয়রা বলছেন, সড়কে এভাবে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখা কেবল অবহেলা নয়, এটি সরাসরি আইনের লঙ্ঘন ও হত্যার মতো অপরাধ। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে সড়কে প্রাণহানি বাড়তেই থাকবে।

Comment / Reply From

Vote / Poll

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন কি?

View Results
হ্যাঁ
0%
না
0%
মন্তব্য নেই
0%

Archive

Please select a date!